পনের বছর আগে সিলেটের ১২ বছরের এক শিশুকন্যাকে গণধষর্ণ ও হত্যা মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার সকালে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মিয়াজী শহিদুল আলম চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বটেশ্বর এলাকার আনোয়ার হোসেন, মো. খোকন মিয়া, ফয়সল আহমদ ও মো. আনাই মিয়া। এর মধ্যে প্রধান আসামি আনোয়ার পলাতক। বাকি তিনজন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৪ জানুয়ারি বিকেলে বটেশ্বর এলাকার ওই শিশু তার দুই ছোট ভাইকে নিয়ে গরু চরাতে ক্যান্টনমেন্টের পাশের একটি মাঠে যায়। কিন্তু সন্ধ্যায় ছোট দুই ভাই গরু নিয়ে বাড়ি ফিরলেও ফিরেনি তাদের বোন। সারা রাত পরিবারের সদস্যরা তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। পরদিন সকাল ১০টার দিকে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ওই গরু চরানোর মাঠের পাশের একটি নির্জন টিলার উপর একটি গর্তের মাঝে ১২ বছরের ওই শিশুর বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। লাশের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিলো। ওই সময় পুলিশ জানায়- গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে এবং হত্যার আগে তাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে।
ঘটনার পর ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর আনোয়ার, খোকন, ফয়সল ও আনাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং রিমান্ডে নেয়। পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
এদিকে, আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিলের আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আসামি আনোয়ার পালিয়ে যান। তিনি এখনো পলাতক। বাকি আসামিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।