বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান, সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব, সিলেটের কৃতি সন্তান, অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেছেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে তার মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারতেন। শেখ রাসেল দিবস জাতীয়ভাবে পালনের মাধ্যমে একদিকে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকারের সুযোগ হয়েছে। অন্যদিকে এ সময়ের শিশু কিশোররা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বন্ধে জানা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ সেবার সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, শিশু রাসেলের হৃদয়জুড়ে ছিল মানুষের জন্য ভালোবাসা। তার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে মানুষের সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করা। দেশের রাষ্ট্রপতির সন্তান হয়েও একদম সাদামাটা জীবন ছিল শেখ রাসেলের। ঘাতকের বুলেট শেখ রাসেলকে স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ দেয়নি। তারপরও বলতে পারি ঘাতকেরা তার স্বপ্নকে হারাতে পারেনি। এ সময়ের লাখো শিশুর মাঝে আরও উজ্জ্বল হয়ে টিকে আছে শেখ রাসেলের স্বপ্নের বাংলাদেশ। আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি ও বহুমাত্রিক কর্মপরিকল্পনায় আজকের শিশু কিশোররাই নেতৃত্বদানের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ডা. স্বপ্নীল (১৮ অক্টোবর) বুধবার সকাল ১০টায় ইমাম প্রশিক্ষক একাডেমীর হলরুমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহের অনুজ শহীদ শেখ রাসেল এর ৬০ তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমী সিলেট ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় আয়োজিত বিশেষ আলোচনা ও দু’আ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমী সিলেটের উপ-পরিচালক শাহ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের পরিচালক মোঃ মহি উদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুবিন আহমদ মবুন।
ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমী সিলেটের তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সিলেট বিভাগের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ জেলার শতাধিক ইমামগণ উপস্থিত ছিলেন। শেখ রাসেলসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
প্রধান অতিথি ডা. স্বপ্নীল আরো বলেন, আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে দেশ নিরাপদ, জনগণ আবারও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। তিনি বলেন, মডেল মসজিদগুলোর সুযোগ-সুবিধা দেখলে সহজে বোঝা যায়, প্রধানমন্ত্রী একটি বিশুদ্ধ ও মানবিক জাতি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে ইসলামের খেদমতে সর্বপ্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে যান। টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার জন্য সুবিশাল প্রান্তর বরাদ্দ করেন বঙ্গবন্ধুই। আজকের বাংলাদেশের মুসলমানদের তাবলিগ জামাতের যে মূল কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ, সেটিও জাতির পিতার অবদান। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে প্রকৃত ইসলামি মূল্যবোধ থেকে সরে গিয়ে এ দেশের মাথার ওপর উগ্রবাদ জেঁকে বসে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী দেশের চেয়েও এখন বাংলাদেশের জিডিপি ও এসডিজির অগ্রগতি ভালো। বিভিন্ন অবকাঠামো ও রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের পাশাপাশি দেশরত্ন শেখ হাসিনা ধর্মীয় ও নৈতিক উন্নয়নের দিকেও নজর দিয়েছেন। পিতার দেখানো পথ ধরে তিনি জাতিগত সংস্কার ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। আর এই জন্যই দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর ইবাদতের জায়গার নির্মাণ শুধু নয়, সেটিকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।