ইসরায়েল গাজা সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার কথা জানিয়েছে। গাজায় প্রতিটি বাড়িতে হামলার বদলে একজন বন্দীকে হত্যার হুমকি সত্ত্বেও ইসরায়েল ৭৫ বছরের মধ্যে ছিটমহলটিতে সবচেয়ে বড় হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে।
হামাস মুক্তিসেনারা আক্রমণ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল বড় প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এরই মধ্যে ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। রাস্তার পাশে অসংখ্য লাশ পড়ে আছে। ২৩ লাখ মানুষের ঘনবসতিপূর্ণ গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণ অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো বলছে, হামাসের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৯০০ জনে পৌঁছেছে, এদের মধ্যে বেশির ভাগই বেসামরিক লোক। বাড়িতে, গাড়িতে, রাস্তায় ও নাচ-গানের আসরে এসব বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়, যা ৯/১১ এর সমান। এ ছাড়া অনেক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গাজার কর্মকর্তাদের মতে, ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৭০০ গাজাবাসী নিহত হয়েছে। ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সমগ্র গাজাকে সমতল করে দেওয়া হচ্ছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ১ লাখ ৮০ হাজার গাজাবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অনেকে রাস্তায় বা স্কুলে আটকে আছে। যেখানে-সেখানে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। এতে রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, উদ্ধারকর্মীরা হতাহতদের কাছে যেতে পারছেন না।
বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় ব্যাপক হতাহত হয়েছে। গাজার খান ইউনিস হাসপাতালের মর্গ থেকে মৃতদেহগুলো স্বজনদের নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কারণ মর্গে লাশ রাখার জায়গা সংকুলান হচ্ছে না।
বিমান হামলা শেষে ইসরায়েলের পরবর্তী পদক্ষেপ হতে পারে গাজা উপত্যকায় স্থলপথে আক্রমণ। সর্বশেষ ২০০৫ সালে ইসরায়েল সেনারা গাজা ছেড়েছিল। এরপর ২০০৭ সালে হামাস সেখানে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গতকাল সোমবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন এখন থেকে গাজায় খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
শনিবার হামাসের আক্রমণ এতটাই চাতুর্যপূর্ণ ছিল যে বহু বিলিয়ন ডলারে নির্মিত উচ্চ প্রযুক্তির সীমানা প্রাচীর নিমেষেই অতিক্রম করেছিল হামাস সেনারা। সেই সীমানা প্রাচীর পুনর্দখলে নিতে দুই দিনেরও বেশি সময় লেগেছে ইসরায়েলের।
ইসরায়েলি নেতাদের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে জিম্মিদের রক্ষা করার জন্য প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ক্ষান্ত দেবে কি না। হামাসের মুখপাত্র আবু উবাইদা গতকাল সোমবার সতর্কতা ছাড়া বেসামরিক বাড়িতে হামলা চালালে একজন ইসরায়েলি বন্দীকে হত্যা ও সেই ভিডিও প্রচারে বাধ্য হবে বলে জানান।