বৃহস্পতিবার , ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, রাত ৩:১১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সজল হত্যা মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন

ডেস্ক রিপোর্ট
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ১:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মুদি দোকানের কর্মচারী সজল বিশ্বাস পটল (৩৮) হত্যা মামলায় আসামি শাকিল ও সুমনকে বয়স বিবেচনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও এই মামলায় আসামীদের ২৮২ ধারায় ২বছর ও ৪৪৯ ধারায় ৫ বছরের কারাদণ্ডেরও আদেশ দেন আদালত। সজল হত্যার ঘটনার পরদিন দোকান মালিক ঋষিকেশ দে বাদি হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় ৫ আসামীর নাম উল্লেখ করে এই হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তারা হলেন – মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানার ভোলারকান্দি গ্রামের মৃত দছির আলীর ছেলে শাকিল (২০) ও মিয়াধন মিয়ার ছেলে সুমন আহমেদ (২২)। এই মামলার অপর তিন আসামি হত্যার ঘটনার সময়ে আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে দোষীপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শিশু আদালতে (মামলা নং ১৫৭/২৩ ) তাদের বিচারিক কার্যক্রম বর্তমানে শুরুর পর্যায়ে রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী দায়রা ৫২০/২৩ মামলায় এই রায় ঘোষণা করেন। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।

মামলার রায় দেয়ার সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, প্রসিকিউশন পক্ষ সর্বতো ভাবে মামলাটি প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন। মামলার আসামীদের বয়স যেহেতু খুবই কম সেকারণে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে তাদেরকে সংশোধনের সুযোগ হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হল। একটা সময় আসামীরা নিজেদের অল্প বয়সের ভূল বুঝতে পেরে কারাগারে শাস্তি ভোগ শেষে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন জানান, আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত স্থানীয় তিন শিশু প্রায়ই ঋষিকেশ দে এর মুদি দোকানে আসতো। ২০ বছর ধরে দোকানে কর্মচারী হিসেবে কর্মরত সজল বিশ্বাস পটলের কাছ থেকে শিশুরা বাকিতে জিনিসপত্র নিতো। পূর্বের বাকির টাকা না দিয়ে নতুন করে বাকিতে মালামাল দেয়ার জন্য দোকান কর্মচারী সজলকে তারা চাপাচাপি করতো। এ নিয়ে হত্যাকাণ্ডের পূর্বে ভিক্টিম সজলের সাথে তাদের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে গত বছরের (২০২২ ইং) ২০ জুলাই রাতে স্থানীয় ৩ শিশুর সাথে ঐ এলাকায় বেড়াতে আসা আসামী শাকিল ও সুমনসহ সর্বমোট পাঁচ জন যুক্ত হয়ে দোকানের সামনের কালভার্টে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে নিহত সজলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন নিহত সজল প্রতিদিনের মতো দোকান মালিকের বাড়ি থেকে রাতের খাবার শেষে দোকানে রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে ফেরত আসলে দোকানে ঢুঁকে ঘটনায় জড়িত ৫ জনের মধ্যে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪জন ভিক্টিম সজলের গলায় গামছা পেছিয়ে একে অপরের সহায়তায় শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এসময় দোকানের বাইরে রাস্তার উপর একজন বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে স্থানীয়দের আসা যাওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখছিল। সজল হত্যাকাণ্ড নিশ্চিত করার পর আসামীরা দোকানের ক্যাশে থাকা নগদ ৩হাজার ২শত ৩০ টাকা চুরি করে লাশ দোকানের দোকানের মেঝেতে ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা এদের দেখে ফেলায় তারা দ্রুতই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ভোর রাতে ঘিলাছড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা থেকে শাকিল ও সুমনসহ ৪জনকে আটক করে। তাৎক্ষণিকই তারা স্থানীয়দের সামনে সজল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর এক শিশুকে আটক করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এক শিশুসহ ৩ জন বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন। এই মামলায় মোট ৩১ সাক্ষীর মধ্যে মোট ১৯ জন সাক্ষী আদালতে তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।