সিলেটে উন্নতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। তবে ঢলের পানি পাহাড়ী এলাকা থেকে নামায় নিচু এলাকাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি এখনো রয়ে গেছে। ইতিমধ্যে ৪ টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে বন্যায়।
সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসের বন্যা পরিস্থিতির তথ্য থেকে জানা যায়, সিলেট জেলায় অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীগুলোর পানি ৪টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও কানাইঘাট উপজেলায় পানি হ্রাস পাচ্ছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সিলেটের ৪ টি উপজেলার ১৮ হাজার ৬৬১ জন মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমানে ২৮০ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
আর দুর্যোগকালীন মজুদকৃত ভান্ডার থেকে এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত ৪টি উপজেলায় ৩৪ মে.টন চাল এবং ১৩২ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬ টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট উপজেলায় ১৭ সে.মি হ্রাস পেয়ে ৮২ সে.মি এবং কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জ উপজেলায় ২৯ সে.মি হ্রাস পেয়ে ১৬৫ সে.মি, বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৫ সে.মি হ্রাস পেয়ে ৪৩ সে.মি ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ১১ সে.মি বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭ সে.মি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদীসমূহের মধ্যে সারি, ডাউকি ও সারি গোয়াইন নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, ভারতে বৃষ্টিপাত এখন আর নেই। আগের পানিগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীর মাধ্যমে নামছে। আর আসামে বন্যা হওয়ায় সেই পানিগুলোও নামতেছে। যার কারণে এখন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সকল পানি নেমে যাবে হাওরাঞ্চলগুলোতে। পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
আবহাওয়া অফিস সিলেট জানায়, সিলেটে মঙ্গলবার সকাল ৬ টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর বুধবার সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ১৫.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস সিলেটের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, সিলেটের আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা রয়েছে। অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি/বজ্রপাত সহ বজ্রপাত এবং অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদ্দুস বুলবুল জানান, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং পানি নিম্নাঞ্চলের দিকে গিয়ে নেমে যাচ্ছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে।