বৃহস্পতিবার , ৪ মে ২০২৩, ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, দুপুর ১২:৫১

মুমিনের জন্য সকল প্রকার অসুস্থতা ও বিপদ তার গুনাহ থেকে মুক্তির উপকরণ : দুধরচকী

ডেস্ক রিপোর্ট
মে ৪, ২০২৩ ৫:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মুমিনের জন্য সকল প্রকার অসুস্থতা ও বিপদকে তার গুনাহ থেকে মুক্তির উপকরণ হিসেবে রাসূল (সা.) বর্ণনা করেছেন। অসুস্থতা ও বিপদ-মুসিবতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভালো দিক হলো, এগুলো আমাদের গুনাহ মাফের জন্য এক শক্তিশালী প্রতিষেধক।অসুস্থতা ও দুনিয়ার জীবনের বিভিন্ন বালা-মুসিবত আমাদের কৃত গুনাহর কাফফারা আদায়ের জন্য অধিক শক্তিশালী কার্যকরী কিছু কষ্টের মুহূর্ত। পবিত্র কোরআন ও হাদীসের বিভিন্ন জায়গায় এর সমর্থনে আয়াত ও হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
পবিত্র কোরআনুল কারিমের সূরা আশ-শুরার ৩০ নং আয়াতে বলা হয়েছে- ‘তোমাদের ওপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি এর মাধ্যমে তোমাদের অনেক গুনাহ ক্ষমা করে দেন।’
মানুষের ওপর যেই বিপদ-আপদ বা অসুস্থতা আপতিত হোকনা কেন, তার সকলকিছুই মানুষের নিজ হাতের উপার্জন মাত্র। এই বিপদ-আপদ বা অসুস্থতা আবার মুমিনদের জন্য আর্শীবাদ হতে পারে যদি তারা তা সম্পর্কে ধৈর্য ধারণ করতে পারে।
প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) একবার জ্বরে আক্রান্ত এক অসুস্থ সাহাবীকে দেখতে গিয়ে বলেন, ‘আমি তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছি। আমার রব আল্লাহ আমাকে বলেছেন, ‘জ্বর হলো আমার প্রতি বিশ্বাসীদের জন্য সেই প্রতিষেধক, যা কিয়ামতের দিন তাদের গুনাহের জন্য শাস্তির পরিবর্তে আমি এখানেই প্রদান করি।’
সুতরাং জ্বর হলো মানুষের পাপমোচনের এমন এক প্রতিষেধক, যার ফলে আখেরাতে মানুষ তার পাপের জন্য নির্ধারিত শাস্তি হতে ক্ষমা পেতে পারে। অপর একটি হাদীসের বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (সা.) জ্বরকে দুনিয়ার জীবনের আগুন হিসেবে উল্লেখ করেছেন যেটি আখেরাতের জীবনের জাহান্নামের আগুন থেকে মুমিনদের রক্ষা করবে।
আরো একটি বর্ণনায় এসেছে, একবার রাসূল (সা.) এর এক মহিলা সাহাবী হজরত উম্মে সায়েব (রা.) জ্বরে আক্রান্ত হলে তিনি তাকে দেখতে গেলেন। উম্মে সায়েব জ্বরে কাঁতরাতে থাকলে রাসূল (সা.) তাকে প্রশ্ন করেন তার সমস্যা সম্পর্কে। তখন তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমার প্রচণ্ড জ্বর হয়েছে। আল্লাহ একে অভিশপ্ত করুন।’ রাসূল (সা.) তখন বলেন, ‘জ্বরকে অভিশাপ দিয়ো না। কেননা এটি গুনাহকে এমনভাবে দূর করে, যেমন হাপরের মধ্যে লোহা থেকে মরিচা দূর হয়।’
রাসূল (সা.) অসুস্থতা সম্পর্কে অপর বর্ণনায় বলেছেন, অসুস্থতা গুনাহকে এমনভাবে ঝরিয়ে মুক্ত করে, যেভাবে শীতে গাছের পাতা ঝরে যায়। মুমিনের জন্য সকল প্রকার অসুস্থতা ও বিপদকে তার গুনাহ থেকে মুক্তির উপকরণ হিসেবে রাসূল (সা.) বর্ণনা করেছেন। এমনকি পায়ে যদি ছোট একটি কাঁটাও বিঁধে, তবে এর মাধ্যমেও মুমিনের কিছু না কিছু গুনাহ’র উপশম হয়।
বুখারী ও মুসলিম উভয় গ্রন্থেই সংকলিত একটি হাদীসে রাসূল (সা.) বলেন, ‘মুমিনদের জন্য যা কিছুই ঘটুক না কেন, সবকিছুই তার জন্য কল্যাণকর এবং এটি শুধু মুমিনদের জন্যই প্রযোজ্য। যখন তার জন্য কল্যাণকর কোনো ঘটনা ঘটে, তখন সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে এবং এটি তার জন্য উত্তম। আর যখন সে কোনো দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে পড়ে, তখন সে ধৈর্য ধারণ করে এবং এটিও তার জন্য কল্যাণকর হয়।’
সুতরাং, মুমিন যে পরিস্থিতির মধ্যেই থাকুকনা কেন, সকলকিছুই তার জন্য উত্তম প্রতিদানে পরিণত হবে যদি সে উপরের হাদীস অনুযায়ী আমল করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেন আমাদের সকল প্রকার বিপদ-আপদ ও অসুস্থতায় ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক যেন দান করেন আমীন। লেখক:- বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।