সিলেটের বিয়ানীবাজারের সেই কেয়ারটেকার নাহিদকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১লা এপ্রিল) তাকে নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম। এর আগে গত শুক্রবার রাতে তার ঘর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। শনিবার রাতেই তাকে নিয়ে বিয়ানীবাজারের উদ্দেশ্য রওয়ানা দিয়েছে পুলিশ। তার বিক্রি করা অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সূত্র ধরেই তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ওসি তাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন : বিয়ানীবাজারে বাড়ির বিছানা ও মেঝেতে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ, কেয়ারটেকার নিখোঁজ
পুলিশের হাতে উদ্ধার হওয়া তাইজুল ইসলাম ওরফে নাহিদ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের পূর্বপাড় এলাকার আব্দুল হেকিমের বাড়ির কেয়ারটেকার। শুক্রবার ভোরে হেকিমের পরিবারের সদস্যরা কেয়ারটেকার তাইজুল ইসলাম নাহিদের ঘরের দরজা খোলা দেখে ভেতরে যান। সেখানে তারা শুধু নাহিদের রক্তে ভেজা বিছানা দেখতে পান। ঘরের মেঝে এবং বারান্দায়ও ছিল ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। তখন তারা থানাপুলিশকে কল করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রা যান। পরে পুলিশ তার খোঁজে তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করলে তাকে নরসিংদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
তাইজুল ইসলাম ওরফে নাহিদ নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার বড়ভিটাবাজার এলাকার বাসিন্দা। সে ২০১৭ সাল থেকে আব্দুল হেকিমের বাড়িতে কাজ করে এবং সেখানেই থাকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নাহিদ প্রায় ১৪ বছর ধরে বিয়ানীবাজারের ওই এলাকায় থাকে। কিন্তু তার প্রকৃত পরিচয় কেউ জানতেন না। নাহিদের বাড়ি নিলফামারীতে এবং সেখানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় তিনি বিয়ানীবাজারে আত্মগোপনে আছেন।
পুলিশ জানতে পারে, নাহিদ মূলত অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত ছিলেন এবং এর মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা তার ঋণ হয়ে যায়। এরপর তিনি কৌশলে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম পরিবর্তন করে স্থায়ী ঠিকানা গোপন রেখে বিয়ানীবাজারের ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে থাকতে শুরু করেন এবং সেই ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তার নাম তাজুল ইসলাম। তিনি নিলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার বড়ভিটা পূর্বপাড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে।
এদিকে, নাহিদের নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশের এ নিয়ে সন্দেহ হলে তার ঘর তল্লাশি করে একটি ডায়েরি পায়। যাতে অনেক দেনা-পাওনার হিসাব লিখে রেখেছিলেন নাহিদ। তল্লাশি করে তার ঘরে একটি বালতি ও মগে রং গুলিয়ে রাখার আলামত পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে নাহিদকে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।