#আগুন দিয়েছে ১/২ জন। কিন্তু, এর পেছনে অনেক মানুষ আছে, পরিকল্পনা রয়েছে
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, চারুকলাতে এমন ঘটনা যারাই ঘটিয়েছে, তারা হয়তো আগুন দিয়েছে ১ জন বা ২ জন। কিন্তু, এর পেছনে অনেক মানুষ আছে, পরিকল্পনা রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই আইনের আওতায় আসবে। প্রত্যেকেই এটার জন্য বিচারের সম্মুখীন হবে। কিন্তু, তারা মনে করবে না যে, এই ঘটনাটা আমাদের দেশে দেশজুড়ে যে উৎসবের আবহ বইছে, এটাতে কোনো বাঁধা দিতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের সম্মিলিত শক্তির সামনে, এই সমস্ত ঠুনকো দুষ্কৃতকারীর আসলে কিছু করবার ক্ষমতা নেই। একটা জিনিস তো আপনারা দেখতে পারছেন যে, জাতীয়ভাবে এবার সকল জাতিগোষ্ঠী নিয়ে উৎসব করা হচ্ছে। আপনারা এটা খেয়াল করেছেন যে, চৈত্রসংক্রান্তির ছুটি দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে এবং সমতলে আমাদের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী যাদের প্রধান উৎসব চৈত্রসংক্রান্তি, তাদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। শুধু ছুটির ব্যাপার না, উৎসবের আয়োজনের দিকে তাকালে দেখবেন, চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হয় সবসময়, এবার সেই শোভাযাত্রায় ২৮ টা জাতিগোষ্ঠী অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশের। এটা একটা ইউনিক ব্যাপার। এটা আমাদের ঐক্য ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশের দিকে আরো মজবুত করা হচ্ছে। এবার শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরেও উৎসব হচ্ছে।
তিনি শনিবার দুপুরে সিলেট সার্কিট হাউজে সিলেটের সাংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলন করে এসব বলেন তিনি। এসময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তিনি বলেন, ঢাকা ইউনিভার্সিটির চারুকলাতে বৈশাখের শোভাযাত্রার যে মোটিফগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেখানে একটা মোটিফ ছিল ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব। সেই ফ্যাসিবাদের মুখাবয়বটা কে বা কারা পুড়িয়ে দিয়েছে ভোর ৪ টার পরে। এটা স্পষ্ট করি জুলাই পরবর্তী সময়ে জুলাইকে চ্যালেঞ্জ করে ফ্যাসিবাদের দোসরদের করা কাজ বলে আমি মনে করছি। তারাই চায় না ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব থাকুক, কেননা নানারকম মতামত থাকতে পারে, যখন এটি পুড়িয়ে দিতে যায়, তখন বুঝতে হবে যে এটার পেছনে একটা অসৎ শক্তি রয়েছে। সেই শক্তির বিরুদ্ধে সরকারের স্পষ্ট একটা অবদান। এটা নিয়ে পুলিশ কাজ করছে, দ্রুতই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
দেশবাসীকে আহবান জানিয়ে তিনি জানান, আমরা সবাই এক হয়ে উৎসব করতে চাইছি ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে। এটা হয়তো অনেকেরই ভালো লাগছে না বুঝতে পারছি। এটার উত্তর হচ্ছে আমরা সবাই আরো বেশি করে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা এবং চৈত্রসংক্রান্তির উৎসবে যোগ দিবো। আমাদের ঐক্য দিয়েই আমরা তাদের পরাজিত করবো।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এই ঘটনাটা যারা ঘটিয়েছে তারা চায় না আমরা যে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠান করতে চাচ্ছি, এই যে ঐক্যের এবং সম্প্রীতির যে বাংলাদেশ করতে চাচ্ছি, এটাতে তারা একধরণের বাঁধা দিতে চায়। তাদের শক্তি এত কম, যেই কাজ করেছে, তার শাস্তি ভোগ করতে হবে। তাদের এত শক্তি আছে বলে আমি মনে করি না যে, সারাদেশের এত শক্তির সামনে তারা দাঁড়াতে পারবে। এটা পহেলা বৈশাখ এবং চৈত্রসংক্রান্তিতে বুঝা যাবে। আজকে পার্বত্য জেলাগুলোতে যে শোভাযাত্রা হয়েছে, মানুষের যে উপস্থিতি, ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব নিয়ে যে মিছিল করেছে, সেটা দেখলেই বুঝবেন যে এটাকে থামিয়ে রাখা যাবে না। আমি মনে করি ন এই শক্তিটা এত শক্তিশালী বা তাদের এমন শক্তি আছে, বাংলাদেশের মানুষের শক্তিকে হারিয়ে দিবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যত বাহিনী আছে, সবাই সম্মিলিত ভাবে কাজ করছে। নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি আছে বলে আমি মনে করি না।