প্রতিষ্ঠিত ৭ সন্তান কৌশলে অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে বৃদ্ধ মা শেরিনা বেগম (৮৫) ও বাবা দাহারুল ইসলামকে (৯০) বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের কামাটোলা বাবুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
বর্তমানে বাড়ি ছাড়া মা-বাবা নিরূপায় হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন একই উপজেলার পুকুরিয়া এলাকায় বাল্যকালের বন্ধুর বাড়িতে। খবর পেয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার-ইউএনও মো. আবুল হায়াত।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ইউএনও মো. আবুল হায়াত শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে দাহারুল ইসলামের বন্ধু আমিনুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাদের খোঁজ নেন।
জানা গেছে, গত বুধবার (৩ মে) শ্যামপুর শ্যামপুর ইউনিয়নের কামাটোলা বাবুপুর গ্রামে বৃদ্ধ মা শেরিনা বেগম ও বাবা দাহারুল ইসলামকে নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেন সন্তানরা।
বাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়া অসহায় পিতা দাহারুল ইসলাম বলেন, আমার ৭ ছেলে-মেয়ে এবং তারা সকলেই প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু কিছুদিন আগে থেকেই তাদের সঙ্গে মনোমালিন্য চলার কারণে তারা মা-বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আমাদের বড় ছেলে রায়নুল হক একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করে, মেজো ছেলে বাগির আলম ভারতের বাসিন্দা, সেজো ছেলে এমরান আলী একটি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক, ছোট ছেলে সাইদুর রহমান ব্যবসায়ী এবং মেয়েদের মধ্যে মেজো মেয়ে স্কুলের শিক্ষক। তবুও আমাদের জন্য তাদের ভাত জুটলো না।
তিনি আরও বলেন, কৌশলে আমার ১৩ বিঘা জমি ও ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সেজো ছেলে এমরান ও ছোট ছেলে সাইদুর। এরপর তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তারা। তাই নিরূপায় হয়ে আমার ছোটবেলার বন্ধু আমিনুলের বাড়িতে উঠেছি।
এ বিষয়ে দাহারুলের বড় ছেলে রায়নুল হক কোন কথা বলতে রাজি হননি। অন্যদিকে ভুক্তভোগীর সেজো ছেলে শিক্ষক এমরান আলীর মোবাইল নম্বরে কল করলে তার স্ত্রী রিসিভ করে বলেন, এ বিষয়ে মোবাইলে কথা বলা সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হায়াত বলেন, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খানের নির্দেশে ওই বৃদ্ধার কাছে গিয়েছিলাম এবং তাকে ফলমূল ও নগদ কিছু অর্থ দেয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছি। উপজেলা প্রশাসন সবসময় তাদের পাশে থাকবে। তবে জন্মদাতা মা-বাবাকে এভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।