নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সিলেটের কানাইঘাটের শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের (৬)। আজ রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় বাড়ির পাশের একটি ডুবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ।
মুনতাহা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদলের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
কানাইঘাটের সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ চৌধুরী জানান, স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকার প্রতিনিধিরা নিখোঁজ মুনতাহার সন্ধানে তাদের বাড়িতে গিয়ে লাইভ দেয়। তখন বাড়ির সবাইকে মুনতাহার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। এসময় পাশের ঘরের মারজিয়া নামে এক ডিভোর্সি নারী কথা বলার একেক সময়ে একেকটা বলে। পরে তাকে সন্দেহ হলে সন্ধ্যায় কানাইঘাট থানা পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। আর ওই রাতেই তার মা মুনতাহার মরদেহ ডুবা থেকে পুকুরে নিয়ে ফেলার সময় স্থানীয় একজন দেখে ফেললে সে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয় আরেকজন তাকে ধরে ফেলেন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই মহিলা ও তার মাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে আর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করে। মারজিয়া মুনতাহাকে প্রতিদিন পড়াতো এবং দিনের বেশিরভাগ সময়ই তার সাথে থাকতো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল জানান, সন্দেহ হওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় তাদের বাড়ির মারজিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তার মা হয়তো ভাবছে মেয়ে পুলিশকে সত্যতা বলে দিবে। সে কারণে হয়তো রাতে তাদের ডোবা থেকে লাশ পার্শ্ববর্তী পুকুরে হস্তান্তরের চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মারজিয়ার মা আলিফজান ও তার নানী কুতুবজানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। মেয়েটি অনেক চালাক। কথা বারবার ঘুরায়। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে, গত ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরে জেরিন। পরে প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু বিকেল হলে বাড়িতে না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এরপর থেকে সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায় নি পরিবার।