মঙ্গলবার , ৯ মে ২০২৩, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, দুপুর ১২:১৭
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ: রোগীদের চরম ভোগান্তি

সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী 
মে ৯, ২০২৩ ৫:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চার মাস ধরে অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তেলের অগ্রিম বরাদ্দ না পাওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ রাখা হয়েছে।‌
হাসপাতাল সূত্র জানায়, স্থানীয় যেকোনো একটি পেট্রোল পাম্প থেকে চুক্তিভিত্তিক তেল নিয়ে এম্বুলেন্স সেবা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। পরে তেল বরাদ্ধের টাকা আসলে বিল পরিশোধ করা হয়। পূর্ববর্তীতে এরকম ভাবেই চলে আসছিল। তবে সর্বশেষ চারমাস আগে এরকমভাবে তেল নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং সর্বশেষ বিল পরিশোধ এ মাসে করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৯ নভেম্বর জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের বাছিরপুর এলাকায় মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সরকারের অধিগ্রহণকৃত ৫ একর জমিতে ৪ তলা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মিত হয়।  ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি জুড়ী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের‌ দেড় লক্ষাধিক মানুষের জন্য একমাত্র সরকারী চিকিৎসা কেন্দ্র।‌ উপজেলা‌ সদরের রোগীরা প্রথম অবস্থায় শহরের মধ্যে অবস্থিত জুড়ী উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন।‌ জুড়ী উপজেলা ছাড়াও পার্শবর্তী বড়লেখা উপজেলা থেকে অনেক রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে এই হাসপাতালে আসেন।‌
উপজেলার দক্ষিণ সাগরনাল গ্রামের ফখর উদ্দিন জানান, সম্প্রতি তার বৃদ্ধ বাবাকে হাসপাতালে নিতে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ফোন দিলে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ রয়েছে বলে জানানো হয়। পরে তাকে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়।‌
স্থানীয় বাছিরপুর এলাকার বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ থাকায় রোগীদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়।
সরকারি এ অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ থাকায়  ইমারজেন্সি সময়ে রোগীকে মৌলভীবাজার বা সিলেটে স্থানান্তর করতে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলোর ওপর ভরসা করতে হয়। আর সে সুযোগে তারা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে।
বাস দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত উপজেলার শিলুয়া গ্রামের শাহারা বেগম (৫০), হরিরামপুর গ্রামের নূর ইসলাম (৫৫) এর আত্নীয়রা আলাপকালে জানান, এ সপ্তাহে বাস দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত আত্নীয়দের নিয়ে  জুড়ী হাসপাতালে গেলে সেখান‌ কর্তব্যরত চিকিৎসক  সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।  আমরা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স নিতে চাইলে তেল সংকটের কারণে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধের বিষয়টি আমাদেরকে জানানো হয়। পরে আমরা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে সিলেট যাই।
মঙ্গলবার (৯ মে) হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতাল প্রাঙ্গণে‌ দুই পাশে দুইটি প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে আছে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অবস্থান জানতে চালক মাসুমকে ফোন করলে তিনি‌ জানান, অ্যাম্বুলেন্স স্টাফ কোয়ার্টারের ভিতরে রয়েছে।‌ পরে স্টাফ কোয়ার্টারে গিয়ে দেখা যায়, একটি আবাসিক ভবনের নিচে অরক্ষিতভাবে অ্যাম্বুলেন্সটি রাখা আছে।  মাসুম জানান,‌ প্রায় চারমাস থেকে অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় হাসপাতালে কোনো কাজ নেই। তবে তারা প্রতিদিনই হাজিরা দেন।
চারমাস বন্ধ থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সমরজিৎ সিংহ বলেন, দুই-আড়াইমাস থেকে এম্বুলেন্স সেবা বন্ধ আছে। অগ্রিম তেলের বরাদ্দ না পাওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসটি বন্ধ রাখা হয়েছে। যে পেট্রোল পাম্প থেকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের তেল নিতাম সেখানে প্রায় ৩ লাখ ৪৫ হাজার মতো টাকা বকেয়া ছিলো, তা ঈদের আগে পরিশোধ করা হয়েছে।‌ নতুন বরাদ্দ আসলে এম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা হবে।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ মুঠোফোনে বলেন, অতি দ্রুত জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালুর বিষয়ে প্রদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।