সিলেটের গোলাপগঞ্জে ঢাকাদক্ষিণে সনাতন ধর্মালম্বীদের বারণী মেলা থেকে আন্তজেলা চোর চক্রের ২৭ জনকে আটক করেছে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে ২৪ জন মহিলা চোর রয়েছে। বারণী মেলা ও ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ গোলাপগঞ্জে এসে প্রথম দিনেই তারা ধরা পড়ে যায়। একই সঙ্গে এত মহিলা চোর ধরা পড়ার বিষয়টি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রচারিত হলে সর্ব মহলে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। তাদের কাছ থেকে স্বর্ণ, রৌপ্য সহমূল্যবান অনেক জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান প্রেসব্রিফিং করে বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করেন। সনাতন ধর্মের মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য দেবের পৈতৃক নিবাস গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণে প্রতি বছর চৈত্র মাসের প্রতি রোববারে বারণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় সনাতন ধর্মের মানুষেরা এ উৎসবের আয়োজন করলেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সনাতন ধর্মের অনুসারীরা এতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এবারও গত ২ এপ্রিল রোববার বারণী উৎসব চলাকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের চোর চক্রের সদস্যরা এখানে আসে। তারা সনাতন ধর্মের মানুষ না হয়ে সনাতন ধর্মের মহিলার পোষাক পরিচ্ছেদ ও হাতে শাঁখা পড়ে মহিলাদের মধ্যে মিশে যায়। এসময় তারা বিভিন্ন মহিলার স্বর্ণের চেইন, হাতের বালা, কানের দুল, মোবাইল ইত্যাদি চুরি করতে থাকলে প্রথমে একজন ধরা পড়ে। ধৃত মহিলা চোরকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, তার বাড়ী ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলায়। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসা বাদ করার পর তথ্যে বেরিয়ে আসে অনেক অজানা কথা। পরবর্তীতে জানা যায়, তারা তিনটি মাইক্রো ভাড়া করে একটি সংঘবদ্ধ দল গোলাপগঞ্জে এসেছে। বারণী মেলা পরে তার গোলাপগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ঈদকে সামনে রেখে চুরির লক্ষে প্রস্তুতি নিয়েছে। পুলিশ বিষয়টি জানার পর এক এক করে ২৭ জন চোরকে আটক করে। তাদের মধ্যে ২৪ জনের বাড়ী ব্রা²ণবাড়িয়া জেলার নাছিরনগর থানার ধরমÐল গ্রামে। বাকী ৩ জন সিলেটের বিভিন্ন এলাকার অধিবাসী। তাদের কাছ থেকে স্বর্ণ রৌপ্য সহ বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি অবহিত করতে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার উদ্যোগে গতকাল সোমবার দুপুরে এক প্রেসব্রিফিং এর আয়োজন করা হয়। এতে বিষয়টি লিখিত ভাবে তুলে ধরেন ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান। এসময় গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম ও অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সুমন সরকারসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। এতো চোর এক সঙ্গে ধরা পড়ার বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যবসায়ী মহলসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ২৪ জন মহিলা চোর আটকের বিষয়টি বেশ কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে। অনেক মহিলার সঙ্গে দুধের শিশুসহ ছোট ছোট ছেলে মেয়ে দেখা যায়। প্রেসব্রিফিং শেষে তাদেরকে সিলেটে কোর্টে প্রেরণ করা হয়।