সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়াস্থ আনোয়ার টাওয়ার নামক বাসায় ১৫মাসের ব্যবধানে ৪টি মোটর সাইকেল চুরি হয়েছে। বারবার এমন দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় বাসার ভাড়াটিয়ারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অভিনব পন্থায় মোটর সাইকেল চুরিতে তাজপুর-বালাগঞ্জ সড়কের পাশে অবস্থিত এই বাসাটি চোর চক্র বারবার কেনো টার্গেট করছে? চোরদের সহযোগী হিসেবে কে বা কারা জড়িত রয়েছে এনিয়ে বাসার ভাড়াটিয়া ও স্থানীয়দের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, আনোয়ার টাওয়ারের নিচতলার কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বাংলাদেশ এক্সটেনশন এডুকেশন সার্ভিসেস (বিজ) ওসমানীনগর শাখা অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল রয়েছে। এছাড়া আনোয়ার টাওয়ারের ভাড়াটিয়াদের মোটর সাইকেল বাসার গ্রাউন্ড ফ্লোরে পার্কিংয়ে রাখা হয়।
১৮মার্চ দিবাগত রাত ৩টা ৩৮মিনিটে বিজ শাখার ব্যবস্থাপক তাপস বৈষ্ণবের ব্যবহৃত লাল-কালো রঙের (১২৫সিসি) ডিসকভার মোটর সাইকেল (ঢাকা মেট্রো-হ-৬৮-০৬৫৭) ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে কর্মরত মাছুমুর রহমান চৌধুরীর ব্যবহৃত কালো-সবুজ রঙের টিবিএস (১২৫সিসি) স্ট্রাইকার মোটরসাইকেল একসাথে চুরি হয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে থাকা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার সময়ে মুখোশধারী ৩জন বাসার কলাপসিবল গেইটের তালা কেটে ভিতরে প্রবেশ করে। পার্কিংয়ে লক করে রাখা মোটর সাইকেলগুলো অভিনব পন্থায় টেনে হেঁচড়ে গেইটের বাহিরে নিয়ে পালিয়ে যায়। মোটর সাইকেল চুরির ঘটনায় বিজ শাখার ব্যবস্থাপক তাপস বৈষ্ণব বাদি হয়ে ১৯ মার্চ ওসমানীনগর থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে ২০২১ সালের ৮ডিসেম্বর রাতে এই বাসা থেকে এক সাথে দুইটি মোটর সাইকেল চুরি হয়। এর মধ্যে বাসার ভাড়াটিয়া রাকিব উদ্দিনের সদ্য ক্রয় করা সুজুুকি জিক্সার ভিত্রি (১৫০সিসি) ও জুবায়ের আহমদের ব্যবহৃত সিলেট-হ-১১-৮২৮৭ হিরো ইগনেটর (১২৫সিসি) মোটর সাইকেল চুরি হয়ে যায়।
বাসার একাধিক ভাড়াটিয়া জানান, বিগত দিনে এই বাসা থেকে কয়েক দফায় আরো কয়েকটি মোটর সাইকেল চুরি হয়েছে। এসব চুরির ঘটনায় ওসমানীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও চুরি হওয়া কোনো মোটর সাইকেল উদ্ধার হয়নি বা কোনো চোরও ধরা পড়েনি। বাসায় বাররবার চুরির ঘটনা ঘটলেও মালিক পক্ষকে বার বার বলার পরও তারা নাইট গার্ড রাখেননি। বাসার মালিক পক্ষ ও কেয়ারটেকারের দায়িত্বহীনতায় এমন ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও ভাড়াটিয়ারা মন্তব্য করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ওসমানীনগর উপজেলা থেকে হরহামেশা মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটনা ঘটছে। হাট-বাজার, বাসা-বাড়ি কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোথাও মোটর সাইকেল রাখা নিরাপদ নয়। পেশাদার চোর চক্র প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটালেও তারা ধরা চোয়ার বাহিরে রয়েছে।
ওসমানীনগর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই সুজিত চক্রবর্তী লিখিত অভিযোগ ও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং চুরির ঘটনায় তদন্ত চলছে।